Paromitar Koyekdin – Part 1

tomal majumder 2017-06-20 Comments

Bengali Sex Stories –

জীবনে অনেক দৃশ্য ছড়িয়ে থাকে, যা চোখের সামনে থাকা সত্বেও নজর এড়িয়ে যায়।অনেক সুযোগ হাতছাড়া ও হয় সেজন্য। আবার এমন অনেক কিছু হঠাৎ করে চোখে পড়ে যায়, যা সারাজীবন মনে হয়, চোখে না পড়লেই ভালো হতো। সেরকমই একটা জিনিসে চোখ পড়েছিলো কলেজে যাবার পথে।

একটা বিজ্ঞাপন! অফিস টাইমের ভিড়ে ঠাসা বাসটা জ্যামে আটকে ছিলো মৌলালি মোড় এ। জানালার বাইরেই একটা চোট্ট বিজ্ঞাপনে চোখটা আটকে গেলো আমার। “অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ” নামের একটা সংস্থার বিজ্ঞাপন।

একটা সামার ক্যাম্প করছে কলেজ স্টুডেন্টস দের নিয়ে। দশদিনের ক্যাম্প, মধ্যপ্রদেশের সাতপুরা মাউন্টেন রেঞ্জের কয়েকটা দর্শনীয় স্থানে ক্যাম্প করবে তারা, এন্ট্রি ফি মাত্র ৩০০০/-….. মাত্র তিন হাজার!!! বেশ লোভনীয় অফার সন্দেহ নেই। হয়তো সংস্থাটা আধাসরকারী তাই ভর্তুকিতে ক্যাম্প করতে পারছে। বাসের গরম আর যাত্রীদের করা ড্রাইভারের বাবার বাক্যশ্রাদ্ধ শুনতে শুনতে, বিজ্ঞাপনের কথা টা ভুলেই গেলাম তখনকার মতো।

পরেরদিন আবার চোখে পড়লো বিজ্ঞাপন টা। একটু লোভ হতে শুরু করলো।এতো অল্প টাকায় মধ্যপ্রদেশ ভ্রমন, সুযোগটা নেবো কি না ভাবছিলাম। সিগনাল সবুজ হওয়াতে বিজ্ঞাপন সরে গেলো চোখের সামনে থেকে। কিন্তু চিন্তা টা উঁকি দিলো আবার রাতের বেলায়।

অনেকদিন কোথাও যাওয়া হয়না, মন্দ হতো না ঘুরে এলে.. ভাবতে ভাবতে ভ্রমণসঙ্গী খানা টেনে নিলাম। সাতপুরা খুলে দেখলাম বেশ প্রসিদ্ধ জায়গা। সাতপুরা মাউন্টেন রেঞ্জ নাকি হিমালয়ের চেয়েও প্রাচীন পর্বত শৃঙ্খলা। পাহাড়, ঝরনা, জঙ্গল আর প্রানী বৈচিত্রে ভরপুর দর্শনীয় জায়গা। প্রধান আকর্ষণ পাঁচমারি গুহা! পাহাড়ের উপরে পাঁচটা গুহা, যা নাকি পান্ডবরা বনবাস কালে বানিয়েছিলো থাকার জন্য।

এছাড়াও পাঁচমারি হ্রদ, ন্যাশনাল পার্ক,মধ্যপ্রদেশ এর উচ্চতম স্থান ধূপগড়, প্রিয়দর্শিনী ভিউপয়েন্ট, যেখান থেকে পুরো অঞ্চলটার একটা দৃষ্টিনন্দন ভিউ পাওয়া যায়, আর আছে ছোটবড় অনেক ওয়াটার ফলস,যার মধ্যে রজতপ্রপাত না দেখলেই নয়। পড়তে পড়তে অসম্ভব এক টান অনুভব করতে শুরু করলাম জায়গাটা দেখার জন্য। বাড়ীর কাছে হাত না পেতেও তিন হাজার টাকা জোগাড় হয়ে যাবে, তাই পরদিন বিজ্ঞাপন থেকে কন্টাক্ট নাম্বার জোগাড় করবো ঠিক করলাম।

পরেরদিন মৌলালি আসতেই বাস থেকে নেমে পড়লাম। বিজ্ঞাপনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। একটা ঠিকানা দেওয়া রয়েছে পার্কসার্কাস অঞ্চলের। কলেজ বাদ দিতে পার্কসার্কাসের দিকেই চললাম। ঠিকানাটা খুঁজে পেতে বেশ কষ্ট হলো। সংস্থার কোনো অফিস না সেটা, একজনের ব্যক্তিগত ঠিকানা।

জিজ্ঞেস করতে জানালো সে কলকাতার দায়িত্বে আছে। কথা বলে মনে হলো সবকিছু ঠিকঠাক ই আছে। এরা প্রতিবছর কিছু কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে পাশ্চাত্য ঘরানায় সামার ক্যাম্প করে থাকে। তবে ১৫/১৬ জনের বেশী নেয় না। সুযোগ পাওয়া যাবে কি না জিজ্ঞেস করতে বললো,দিন দুয়েক পরে খোঁজ নিতে, সে হেড অফিসে যোগাযোগ করে জানাবে সিট ফাঁকা আছে কি না?

নিজের ফোন নাম্বার তাকে দিয়ে চলে এলাম। ঠিক দুদিন পরেই ফোনটা এলো। আমাকে জানানো হলো, আমি ভাগ্যবানদের একজন।কালকের মধ্যে টাকা জমা করলে আমি সারাজীবন মনেরাখার মতো একটা ক্যাম্পের সদস্য হতে পারি। মনে মনে একটু খটকা ছিলো যে চিনিনা জানিনা, একটা লোকের হাতে তিন হাজার টাকা তুলে দেবো? কিন্তু যখন শুনলাম যে টিকিট কাটার জন্য এক হাজার টাকা এখন দিতে হবে আর বাকী দুহাজার ক্যাম্পে পৌঁছে দিলেই হবে,মন থেকে সব সন্দেহ দূর হয়ে গেলো। পরদিন গিয়ে লোকটার হাতে হাজার টাকা এবং নিজের নাম ঠিকানা দিয়ে এলাম।টিকিট হয়ে গেলে কবে কোথায় কিভাবে যেতে হবে, আমাকে জানানো হবে বলা হলো।

ছ’দিন পরে আমাকে ফোন করে জানানো হলো, জুন মাসের ৩ তারিখ রাত দশটায় ট্রেন ছাড়বে হাওড়া স্টেশন থেকে। মুম্বাই মেল, ভায়া এলাহাবাদ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমার সঙ্গে আরো দুজন যাচ্ছে।হাওড়া স্টেশনে ভদ্রলোক আমাদের সঙ্গে দেখা করে আমাদের ট্রেনে তুলে দেবে। আমাদের নামতে হবে পিপারিয়া স্টেশন এ। সেখানে হেড অফিসের লোকজন আমাদের রিসিভ করে নেবে।প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাওড়া স্টেশনেই দিয়ে দেওয়া হবে।

বাকী কয়েকদিন বেশ উত্তেজনায় কাটলো। বাড়ী থেকে মা বেশ আপত্তি তুলেছিলো, এভাবে অজনা অচেনা সংস্থার সাথে যাচ্ছি বলে। পরিচিত বন্ধুরা যাচ্ছে, এরকম মিথ্যা বলে মা কে নিমরাজি করিয়ে ফেললাম। নির্দিষ্ট দিনে মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে,ছোট একটা ব্যাগ গুছিয়ে হাজির হলাম হাওড়া স্টেশনে। বড় ঘড়ির নীচে ভদ্রলোকের জন্য অপেক্ষা করার কথা।

সেখানে পৌঁছে দেখি একটা ছেলে আর একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে আগে থেকেই। ছেলেটার ছোটখাটো চেহারা, বয়স আমার সমান ই হবে।কিন্তু চোখ টানলো মেয়েটা।আমার চেয়ে বছর দুয়েকের ছোট হবে বলেই মনে হলো।জিন্স আর একটা টপ পড়ে আছে। ভীষন স্মার্ট, চোখে মুখে একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব, কিছুটা ঔদ্ধত্য ও রয়েছে যেন। প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কোনো যাত্রী হবে বোধহয়। ছেলেটা আর মেয়েটা নিজেদের ভিতরে কথা বলছিলো।

আমি চারদিকে তাকিয়ে সেই ভদ্রলোককে খুঁজছিলাম। ৯-১৫ নাগাদ ভদ্রলোক এলেন। আমি এগিয়ে যেতেই লক্ষ্য করলাম সেই যুগল ও তার দিকে এগিয়ে গেলো। বুঝলাম আমরাই সেই তিন ভাগ্যবান। মনের খুশির মাত্রা লাগাম ছাড়া হলো এরকম স্মার্ট, সুন্দরী এক সহযাত্রিনী পেয়ে। ভদ্রলোক আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন।ছেলেটার নাম, যোগেন রায়, বাড়ী মালদা আর মেয়েটা পারমিতা চক্রবর্তী, বাড়ী বেহালা।

যোগেন আর পারমিতার পরিচয় বোধহয় আমার চেয়ে মিনিট ত্রিশেক আগে হয়েছে, তাই দুজনে বেশ আলাপে মশগুল।আমি যে একজন আছি সঙ্গে, সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। ঠিক সময়ে ট্রেন ছেড়ে দিলো। একই রো এর দুটো লোয়ার বার্থ আর একটা মিডিল বার্থ পেয়েছি আমরা। আমি আর যোগেন নীচে, পারমিতা যোগেনের উপরে।

পারমিতা নীজের সীট দেখে নাক কোঁচকালো।আমি ভাবলাম এটাই সুযোগ নীজের সীট তাকে দিয়ে সম্পর্কটা সহজ করে নেবার, কিন্তু এবার ও যোগেন আমার চেয়ে এগিয়ে থাকলো। তাড়াতাড়ি নিজের লোয়ার বার্থটা পারমিতা কে ছেড়ে দিয়ে তাদের বন্ধুত্ব আরো কাছাকাছি এনে ফেললো। আমি দীর্ঘশ্বাস চেপে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলাম।

অনেক রাত পর্যন্ত দুজনের বকবক শুনলাম। শুনতে শুনতে পারমিতার সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে গেলাম, কিন্তু যোগেন সম্পর্কে ধারনা স্পষ্ট হলো না। আড় চোখে দেখছিলাম পারমিতা কে। উফ্ শরীরের বাঁধুনি ভীষন রকম উত্তেজক। খুব রোগাও না আমার মোটাও না। যেখানে যতোটুকু মাংস আর মেদ থাকার কথা, ভগবান যেন মেপে মেপে লাগিয়েছে। ভয়ঙ্কর ঈর্ষা বোধ করলাম যোগেনের প্রতি।

যোগেন একটু বেশী কথা বলে। তাই বোধহয় একসময় উৎসাহ হারিয়ে ফেললো পারমিতা। বললো, ঘুম পাচ্ছে, চেঞ্জ করতে বাথরুম যাবে।যোগেনের বোধহয় ইচ্ছাছিলো আরো গল্প করার, একটু নিরাশ মনে হলো তাকে। সে বললো চলো, আমি নিয়ে যাচ্ছি বাথরুম এ। কাটা কাটা স্বরে পারমিতা বললো, শুনুন মিঃ, একা এসেছি একটা অজানা ক্যাম্পে যোগ দিতে… সুতরাং বুঝতেই পারছেন, অবলা টাইপ মেয়ে আমি নই। একা ট্রেনে ট্রাভেল করার অভ্যেস আছে আমার। তাই বাথরুমে আমি একাই যেতে পারবো। গুডনাইট। কাল সকালে কথা হবে।

Comments

Scroll To Top